August 3, 2025, 2:51 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
জাতিসংঘের প্রতিবেদনের মূল্য দেয় না কেউ, ভেসে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা : খোদ জাতিসংঘ হাজার কোটি টাকার গড়াই নদী খনন/ দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, সঠিক ব্যবস্থাপনা ও স্বচ্ছতার অভাবে ব্যর্থতা ৫ আগস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র উপস্থাপন মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ১৭ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করল বিএসএফ কার্যকর/ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক দেশে প্রতি চারজনের একজন বহুমাত্রিক দরিদ্র, শিশুদের ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বছরে ১০-১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা ঘোষণা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন: মানুষের প্রকৃত আয় এখনো ঋণাত্মক হোমল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স/১ কোটি ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে যশোরে মামলা গোপন তৎপরতার আশঙ্কা: ১১ দিনের ‘বিশেষ সতর্কতা’ জারি করেছে পুলিশ

নিষেধাজ্ঞা আমান্য করে রাজবাড়ীতে ইলিশ শিকার চলছে, মিলছে হোম ডেলিভারি !

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে সারাদেশে। নদীতে মাছ ধরা, বিক্রি ও পরিবহন বন্ধ। কিন্তু তারপরেও রাজবাড়ীর সদর উপজেলা ও গোয়ালন্দ উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকায় প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। নদীতে এ সময়েও ইলিশ ধরার মহোৎসব চলছে, গ্রাহকের কাছে সেগুলো পৌঁছাচ্ছে হোম ডেলিভারি।
সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের জৌকুড়া ঘাট থেকে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত নদী এলাকায় চলছে এসব ইলিশ বেচাকেনা। বিশেষ ক্ষেত্রে রাজবাড়ী শহরে এনে চোরাই ইলিশ হোম ডেলিভারিও দিচ্ছেন অসাধু জেলে ও তাদের লোকেরা।
জৌকুড়া ঘাট থেকে দৌলতদিয়া পর্যন্ত নদী এলাকায় চলছে এসব ইলিশ বেচাকেনা। বিশেষ ক্ষেত্রে রাজবাড়ী শহরে এনে সেগুলো হোম ডেলিভারিও দেওয়া হচ্ছে।
জেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছেন।
গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাওয়ালজানি গ্রামের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন অবৈধ শৌখিন জেলেরা নদী থেকে ইলিশ শিকার করে তারা নদীর তীরে এনেই বিক্রি করছেন। ১ কেজির বেশি ওজনের ইলিশগুলো তারা ১ হাজার ৫০০ টাকা ও ছোট (জাটকা) ইলিশ মাছ ৫৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন তারা। তবে এ সময় নদীতে মৎস্য বিভাগের কাউকে অভিযান চালাতে দেখা যায়নি।
দৌলতদিয়া ফেরিঘাট, লঞ্চঘাট, চলন্ত ফেরি ও লঞ্চে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীদের ডালিতে করে ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভাইরাল হয়েছে।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ী জেলায় পদ্মা নদীর অংশ রয়েছে ৪২ কিলোমিটার। গত ১৩ অক্টোবর থেকে আজ ১৯ অক্টোবর ৭ দিনে জেলায় মা ইলিশ রক্ষা অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্টে চারজন জেলেকে ৭ দিনের কারাদণ্ড ও ২৬ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও এই সাত দিন অভিযান চালিয়ে ইলিশ শিকারে ব্যবহৃত অবৈধ ১ লাখ ৬২ হাজার মিটার কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে এবং ৩১০ কেজি ইলিশ জেলেদের কাছ থেকে জব্দ করে স্থানীয় এতিমখানায় দান করে দেওয়া হয়েছে।
গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও প্রতিদিনই বিভিন্ন অবৈধ শৌখিন জেলেরা পদ্মা নদী থেকে কারেন্ট জাল দিয়ে ইলিশ ধরে নদীর কিনারে নিয়ে আসছেন। সেখানে প্রকাশ্যে বড়, ছোট ইলিশ মাছগুলো মৌসুমি মাছ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া সেখানে একটু কম দামে পাওয়ায় গ্রামের অনেক দরিদ্র মানুষ সেখান থেকে ইলিশ কিনছেন। পুলিশ এসে অভিযান চালালেও অজানা কারণে তারা রেহাই পেয়ে আবার অগোচরে মাছ ধরা অব্যাহত রাখছেন।
মাছ কিনে নেওয়া এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইলিশগুলো আমরা এখান থেকে একটু কম দামে কিনে নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে একটু লাভ রেখে বিক্রি করি। তবে তিনি এ ব্যাপারে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি।
দৌলতদিয়া ঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. এমরান হোসেন তুহিন বলেন, জেলেদের প্রকাশ্যে মাছ ধরা ও বিক্রির বিষয়টা জেনেছি। এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে আমরা নৌ-পুলিশ নিয়ে নদীতে অভিযান চালাবো।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, গোয়ালন্দের ১৯ কিলোমিটার অংশের পদ্মা নদীতে প্রশাসন, থানা পুলিশ ও মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার এই সময়ের মধ্যে কেউ মা ইলিশ ধরলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, নদীর মাছ বিক্রির অভিযোগ এসেছে। শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সেনাবাহিনী নিয়ে পদ্মা নদীর কলাবাগানসহ দেবগ্রামে অভিযান চালানো হয়েছে।নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা মৎস্য অফিসার ও সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল রাজিব বলেন, আমরা রাজবাড়ী সদর উপজেলার পদ্মা নদীর অংশে শনিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়েছি। এ সময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অবৈধভাবে ইলিশ শিকারের দায়ে চার জেলেকে ৫ হাজার টাকা করে মোট ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া তাদের কাছে পাওয়া ৫০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় যার আনুমানিক মূল্য ১০ লাখ টাকা। তাদের কাছে থেকে জব্দকৃত ৬০ কেজি ইলিশ পাঁচটি এতিমখানায় দান করা হয়েছে।
তিনি জানান, নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যে-সব জেলেরা মাছ ধরছেন তাদের ভিজিএফসহ অন্যান্য সুবিধা বাতিল করা হচ্ছে। এছাড়াও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল, জরিমানা করা হচ্ছে। তাদের থেকে জব্দ করা জাল পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, মাছ বিক্রির বিষয়টি আমি শুনেছি। মৎস্য অফিসারকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। মা ইলিশ রক্ষা করতে আমাদের অভিযান চলছে। আজকেও চারজন জেলেকে ৫ হাজার টাকা করে মোট ২০ হাজার টকা জরিমানা করা হয়েছে এবং ৫০ হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net